করোনাভাইরাস সংক্রমণ থেকে সুরক্ষায় গণপরিবহনে স্বাস্থ্য বিধি মেনে চলার তাগাদা দিয়ে সড়ক পরিবহন মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, সাবধান না হলে অতি সংক্রামক এই ভাইরাস কাউকে ছাড়বে না।
বৈশ্বিক মহামারী করোনাভাইরাসের বিস্তার ঠেকাতে টানা দুই মাসের লকডাউন শেষে গণপরিবহন চালুর দ্বিতীয় দিন এই সতর্ক বার্তা দেন তিনি।
মঙ্গলবার রাজধানীর সংসদ ভবন এলাকায় নিজের সরকারি বাসভবন থেকে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্পোরেশন-বিআরটিসি’র কর্মকর্তা-কর্মচারীদের সাথে ভিডিও কনফারেন্স করেন ওবায়দুল কাদের।
![]() |
ওবায়দুল কাদের | ফাইল ছবি |
সবাইকে সতর্ক করে তিনি বলেন, “করোনাভাইরাস যাত্রী-মালিক-শ্রমিক আলাদা করে চিনবে না, ছাড় দিবে না। নিজেদের স্বার্থেই সচেতনতা জরুরি। সংক্রমণের বিস্তার রোধে সকলকে দৃঢ় মনোবল নিয়ে ঐক্যবদ্ধ হয়ে সচেতনতার প্রাচীর নির্মাণ করতে হবে।”
গণপরিবহন চলার প্রথম দিনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে ‘স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে’ দাবি করে ওবায়দুল কাদের বলেন, “সোমবার থেকে সারা দেশে শর্ত সাপেক্ষ গণপরিবহন চলছে। প্রথম দিনে অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি মানা হয়েছে। অর্ধেক বা তার চেয়েও কম যাত্রী নিয়ে গণপরিবহন চলেছে। অনেকের ভাড়া সমন্বয় নিয়ে শঙ্কা ছিল। স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনগণের প্রতি মানবিক আচরণ এবং সংকটে ইতিবাচক সাড়া দেয়ায় আমি মালিক সমিতি, শ্রমিক সংগঠনসহ সংশ্লিষ্টদের ধন্যবাদ জানাচ্ছি।
“অনেকে মনে করছেন যাত্রী সংখ্যা বাড়লে পরিবহনসমূহ অর্ধেক আসন খালি রাখার শর্ত মানবে না। জনগণের এ আশঙ্কা থেকে পরিবহন মালিক ও শ্রমিকরা নিজেদের মুক্ত রাখবেন বলে আশা করি।”
গাড়িতে উঠার আগে, গাড়িতে থাকাকালীন এবং নামার সময়- প্রতিটি ক্ষেত্রে স্বাস্থ্যবিধি ও সামাজিক দূরত্ব বজায় রাখার অনুরোধ জানান মন্ত্রী কাদের।
বক্তব্যে অনিয়ম ও দুর্নীতির বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে বিআরটিসিকে লাভের ধারায় ফিরিয়ে আনার আহ্বান জানান তিনি। বিআরটিসির বাসে ট্রাকিং ডিভাইস স্থাপন ও ডিজিটাল টিকেটিং চালুর উদ্যোগ নেওয়ার নির্দেশনা দেন মন্ত্রী।
এই সঙ্কটকালে ভাড়া বেড়েছে ৬০ শতাংশ, যাত্রীদের কাছ থেকে তারও অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হচ্ছে কি না, সে বিষয়ে জানার চেষ্টা করছেন একজন ট্রাফিক পুলিশ সদস্য। ছবি: মাহমুদ জামান অভি
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বক্তব্যে রাজনৈতিক প্রতিপক্ষ বিএনপির সমালোচনার জবাবও দেন।
করোনাভাইরাস বিশ্বকে বদলে দিলেও বিএনপির ‘নেতিবাচক ও দায়িত্বহীন’ রাজনীতিকে বদলাতে পারেনি বলে মন্তব্য করেন তিনি।
কাদের বলেন, “দলটি নেতিবাচকতায় সংক্রমিত। একটি দল সংক্রমণের শুরু থেকেই একই বক্তব্য দিয়ে আসছেন। অনবরত সমালোচনার ভাঙা রেকর্ড বাজাচ্ছেন। অন্ধ সমালোচনা নেতিবাচকতা আর মিথ্যাচারের বৃত্ত থেকে তারা বের হতে পারছে না। প্রাণঘাতী করোনা বদলে দিচ্ছে বিশ্ব, বদলে দিচ্ছে পরিবেশ শিষ্টাচার, কিন্তু এই দলটাকে বদলাতে পারেনি।
“তারা নিজেদের মধ্যকার সমন্বয়হীনতা না দেখে অন্যত্র দেখতে পায়। নেতিবাচক ও দায়িত্বহীন রাজনীতির কারণে ইতোমধ্যে তারা রাজনীতির আইসোলেশনে পৌঁছে গেছে। বিষোদগারের ভাইরাসে আক্রান্ত বিএনপি কারও ভালো কাজ দেখতে পায় না। তাদের মাঝে ছড়িয়ে পড়েছে নেতিবাচকতার সংক্রমণ।”
তিনি বলেন, “মির্জা ফখরুল সাহেব বলেছেন, সরকার নাকি কানে তুলো দিয়েছে। আমি বলতে চাই, সরকারের ষষ্ঠ ইন্দ্রিয় সক্রিয় আছে। বরং আপনারাই দেখতে পাচ্ছেন না, অসহায় কর্মহীন মানুষের কষ্ট, জীবন রক্ষায় জীবিকার সমন্বয়। দেখতে পাচ্ছেন না সরকারের সক্ষমতা বৃদ্ধির নিরলস প্রচেষ্টা। চোখ বন্ধ রাখলে অবশ্য দেখতে পাওয়া যায় না।
“চোখের সামনে থেকে মরচে ধরা চশমা সরিয়ে ফেলুন। তবেই সরকারের কার্যক্রম দেখতে পাবেন। বিএনপির দৃষ্টিসীমায় অবৈধ ক্ষমতায় মসনদ আর দুর্নীতির পাহাড়। তাই তারা সরকারের ইতিবাচক কিছু দেখতে পায় না।”