ব্রাহ্মণবাড়িয়ার কসবায় করোনায় ক্ষতিগ্রস্ত কর্মহীন দরিদ্রদের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঈদ উপহার বিতরণ তালিকায় অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে উপজেলার মেহারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম মিয়ার বিরুদ্ধে। প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার হিসেবে আড়াই হাজার টাকা বিতরণের তালিকায় চেয়ারম্যানের ছেলেসহ পরিবারের ১৯ জনের নাম রয়েছে বলে জানা গেছে। তবে চেয়ারম্যান বলেছেন, তালিকায় তার ছেলের নাম নেই।
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে (পিআইও) আহ্বায়ক করে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে ৩ কার্যদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দিয়েছেন উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম।
সারা দেশে করোনার প্রভাবে ক্ষতিগ্রস্ত ৫০ লাখ পরিবারের মাঝে প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া ঈদ উপহার মোবাইল ব্যংকিংয়ের মাধ্যমে দেওয়ার কার্যক্রম শুরু হয়। প্রতি পরিবারকে আড়াই হাজার টাকা করে দেওয়া হচ্ছে। সুষ্ঠুভাবে বিতরণের লক্ষ্যে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন, ইউপি চেয়ারম্যান, শিক্ষক ও সমাজের গন্যমান্য ব্যক্তিদের সমন্বয়ে কমিটি গঠন করে প্রকৃত হতদরিদ্রদের তালিকা তৈরি করতে বলা হয়। ব্রাহ্মণবাড়িয়ার ৯টি উপজেলার ৭৫ হাজার পরিবারকে এই তালিকার অন্তর্ভুক্ত করা হয়। কিন্ত অভিযোগ উঠেছে, স্বজনপ্রীতি ও ক্ষমতার অপব্যবহার করে ছেলেসহ পরিবারের ১৯ জনের নাম তালিকায় অন্তর্ভূক্ত করেচেন কসবা উপজেলার মেহারী ইউপি চেয়ারম্যান মো. আলম মিয়া। পরিষদের করা ৫৮৮ জনের তালিকার মধ্যে চেয়ারম্যানের ছেলে ,ভাই, বোনসহ নিকটাত্মীয়ের নাম অন্তর্ভুক্ত হয়েছে। তালিকার ৬০ নম্বরে তার ছেলে আরাফতসহ যথাক্রমে ২, ৬০, ৪৯, ৬৩, ১০১, ১৩৩, ২১২, ৩২২, ১১১, ১১৭, ১২১, ১৭৯, ৩২৮, ৩৪৪, ৩৯১, ৪৭৭, ৫১২, ৫৩৫ ও ৫৪৪ নম্বরে তার পরিবারের লোকজনদের নাম লিপিবদ্ধ করা হয়েছে। এলাকার হতদরিদ্রদের নাম বাদ দিয়ে নিজের পরিবারের লোকজনের নাম তালিকাভুক্ত করায় মানুষের মাঝে অসন্তোষ দেখা দিয়েছে।
অভিযোগের বিষয়ে মেহারী ইউপি চেয়ারম্যান আলম মিয়া বলেন, তালিকায় বোনের নাম নেই, দুই ভাইয়ের নাম আছে। চাচাত ভাই একজন গরীব আছে, এজন্য তার নাম দেওয়া হয়েছে। তবে তালিকায় ছেলের নাম নেই বলে দাবি করেন তিনি।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মাসুদ উল আলম বলেন, প্রধানমন্ত্রীর ঈদ উপহার তালিকায় মেহারী ইউপি চেয়ারম্যানের স্বজনপ্রীতির বিষয়টি আমরা জানতে পেরেছি। বিষয়টি জানার পর যাচাই বাচাই করার জন্য তাৎক্ষণিক উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তাকে আহ্বায়ক করে তিন সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে তিনদিনের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। অভিযোগ প্রমাণ হলে চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়াসহ তালিকা থেকে তার স্বজনদের নাম বাদ দেওয়া হবে।